আল আমিন: স্টাফ রিপোর্টার
চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭০ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য সুবিধা আনুপাতি হারে বৃদ্ধি পাবে। সব মিলিয়ে দৈনিক মজুরি হবে ৪৫০-৫০০ টাকা।
শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে চা বাগান মালিকদের বৈঠকের পর এ সিদ্ধান্ত ঘোষণ করা হয়।
দুঈ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে গণভবনের সামনে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব আহমেদ কায়কাউস।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চা বাগান মালিকদের নিয়ে ২ ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেছেন। তাদের সঙ্গে কথা বলে সবকিছু বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেছেন।
এই মজুরির সঙ্গে তাদের (শ্রমিক) বোনাস, বার্ষিক ঝুঁকি ভাতা, উৎসব-ছুটি ভাতা এবং অসুস্থতাজনিত ছুটিও আনুপাতিক হারে বাড়বে।’
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব বলেন, ‘শ্রমিকদের ভবিষ্যৎ তহবিলে মালিকপক্ষ যে টাকা দেয়, সেটিও আনুপাতিক হারে বাড়বে। রেশনের মাধ্যমে মালিকপক্ষ চা শ্রমিকদের যে খাদ্যপণ্য দেয়, সেগুলো খুব কম দামে দেয়া হয়। এর ব্যয়ভার মালিকপক্ষই বহন করবে। শ্রমিকদের রেশন, চিকিৎসা-শিক্ষা ভাতাও দেয়া হয়। আমরা হিসাব করে দেখেছি, এতে একজন চা শ্রমিকের জন্য দৈনিক সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা মালিকপক্ষের খরচ হয়।
বাগানের মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি:পিএমও
‘প্রধানমন্ত্রী সবাইকে কাজে যোগ দিতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, আগামীকাল থেকেই যেন তারা কাজে যোগ দেন। কারণ তাদের পক্ষ হয়েই প্রধানমন্ত্রী মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি খুব শিগগির ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চা শ্রমিকদের সঙ্গেও কথা বলবেন।’
এ সময় বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান এন শাহ আলম বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বললাম। তিনি যে নির্দেশনাগুলো দিয়েছেন তার সবই আমরা মেনে নিয়েছি। আমি সব শ্রমিকের আহ্বান জানাই, তারা যেন আগামীকাল থেকে কাজে যোগ দেন।’
দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে আন্দোলনে নামেন দেশের ১৬৬টি চা বাগানের দেড় লাখের বেশি শ্রমিক। সেদিন থেকে চার দিন পর্যন্ত ২ ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করেন তারা।
মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে চা শ্রমিকরা। ফাইল ছবি
এরপর ১৩ আগস্ট থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। ১৯ আগস্ট রাতে মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৪৫ টাকা করার বিষয়ে একটি চুক্তিও হয়। কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলন চালিয়ে যান শ্রমিকরা।
এর মধ্যে কয়েক দফা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হলেও বিষয়টির সুরাহা হয়নি। মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনে থাকা চা শ্রমিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিডিও বার্তার দাবি জানানো হয়। অবশেষে চা বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানালেন সরকারপ্রধান।
মন্তব্য