শ্রীবাস সরকার, বিশেষ প্রতিনিধি ঃঃঃঃঃ
মাধবপুরে জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে একটি মামলায় আরিফুল ইসলাম জিয়া নামের বিএনপির এক নেতাকে কারাগারে প্রেরণ করেছে আদালত।
তিনি বিএনপির অঙ্গ সংগঠন জাতীয়তাবাদী পেশাজীবী দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি। তার জন্মস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া হলেও প্রতারণার ফাঁদ ফাততে বিভিন্ন জায়গায় বসবাস করে। আরিফুল ইসলাম জিয়া মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল উপজেলার মুসলিমবাগ এলাকার মৃত মোহাম্মদ আলীর ছেলে।
বুধবার (১০আগস্ট ২০২২) দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক জাকির হোসেন।
এর আগে উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক দিন আগেই আদালতে হাজির হলে, আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
বাদী পক্ষের আইনজিবী এডভোকেট শফিউল আলম আজাদ বলেন, আরিফুল ইসলাম জিয়া একজন ভূমি খেকো হিসেবে পরিচিত। সে মাধবপুর উপজেলার হরিতলা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জমি কেনার নামে মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। শুধুমাত্র ব্যাংকের চেক দিয়ে জমি কিনে দলিল করে। কিন্তু সেই ব্যাংক একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় চেকের টাকা চাইতে গেলেই বিভিন্ন মামলা দিয়ে হয়রানী করে এবং অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে চেক ছিনিয়ে নিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে আসছে।
এরই অভিযোগে ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকা আত্মসাত করায় নুর জাহান বেগম বাদী হয়ে গত ১২ জুন হবিগঞ্জ আদালতে কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর আদালতের বিচারক অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দেয়। এর প্রেক্ষিতে ১৬ জুন মাধবপুর থানায় কয়েকজনের বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে পুলিশ।
উক্ত মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন নেন আরিফুল ইসলাম জিয়া। জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগেই আদালতে আত্মসর্মপণ করে পূনরায় জামিনের আবেদন করেন। আদালত তা নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অন্য আসামীরা আগামী তারিখ পর্যন্ত জামিনে রয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, আরিফুল ইসলাম জিয়া ২০১৬ সালে ওই এলাকার নুরজাহান বেগমের সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে ২৫৮ শতক জমি ৩ কোটি ৭৫ লাখ টাকায় ক্রয় করে। নগদ ৪০ লাখ টাকা ওই সময় দিলেও বাকি টাকার ৬টি চেক হস্তান্তর করে জিয়া। নির্ধারিত সময়ে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নেয়ার কথা বললেও তাল বাহানা করে ৬ বছর ধরে দেই দিচ্ছি বলে ঘুড়াতে থাকে। পরে তার দলিল লেখক সালাহ উদ্দিনসহ বেশ কয়েকজন মিলে নোয়াপাড়া দলিল লেখকের অফিসে টাকা দেয়ার কথা বলে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৫টি চেক নিয়ে যায়। এসময় প্রাণনাশের ভয় দেখিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষরও রাখে এই জিয়া।
এ নিয়ে এলাকায় মানববন্ধও হয় ভূমি দস্যু জিয়ার বিরুদ্ধে। এরপর নুরজাহান ও তার পরিবারকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে হবিগঞ্জ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চলতি বছরের ১২ জুন একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-২৯৫/২২ হবিগঞ্জ।
মন্তব্য